রাস্তা বাঁচাতে একজোট হয়ে গ্ৰামবাসীরা বন্ধ করে দিলো অবৈধ বালিখাদান

4th July 2020 9:41 pm বর্ধমান
রাস্তা বাঁচাতে একজোট হয়ে গ্ৰামবাসীরা বন্ধ করে দিলো অবৈধ বালিখাদান


পার্থ ব‍্যানার্জী ও সিদ্ধার্থ পাকিড়া  ( জামালপুর ) :  অবৈধ বালি খাদান ও ওভারলোড বালির লরি চলাচল বন্ধ করলো গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের  জামালপুর থানার জ‍্যোতশ্রীরাম পঞ্চায়েতের কোড়া গ্রামের। অবৈধ বালি খাদান বন্ধ হবার সাথে সাথে গ্রামের রাস্তা দিয়ে ওভারলোড  বালির লরি চলাচল বন্ধ হওয়ায় আপাতত স্বস্তিতে কোড়া গ্রামের বাসিন্দারা । 

গ্রামবাসী সৌমিত্র ঘোষ বলেন , তাঁদের এলাকার মানুষজনের যাতায়াতের প্রধান রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়েছিল । তারজন্য এলাকার মানুষজনকে কম ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়নি । বহু আবেদন নিবেদনের পর শেষমেষ পঞ্চায়েত ওই রাস্তা  সংস্কারের উদ্যোগ নেয় । কয়েক  লক্ষ টাকা খরচ করে মাস ৬-৭ আগে পঞ্চায়েত থেকে কোড়া গ্রামের দেড় কিমি রাস্তাটি পাকা পিচ রাস্তা করেদেওয়া হয় ।একই সঙ্গে রাস্তার পাশে করে দেওয়া হয় পাকা ড্রেন । সৌমিত্র ঘোষ সহ গ্রামের অপর একাধীক বাসিন্দা অভিযোগে বলেন ,রাস্তা ভালো হয়ে যাবার পর মাস ৫-৬ আগে  কিছু অসাধু ব্যক্তি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মুণ্ডেশ্বরী নদীতে অবৈধ খাদান চালু করে বসে । সেই খাদান থেকে প্রতিদিন শয়ে শয়ে লরি ও ডাম্পারে বালি লোড করে  গ্রামের রাস্তা অন্যত্র পাচার করে দেওয়া শুরু হয়। আর নিত্যদিন ওভারলোড বালির লরি ও ডাম্পার চলাচলের কারণে কয়েক মাসের মধ্যেই দেড় কিমি পিচ রাস্তা ফের বেহাল হয়ে গিয়েছে।অনেক জায়গায় রাস্তার পাশের ড্রেনও বালির লরি ভেঙে দিয়ে চলে গেছে ।প্রতিনিয়ত বালির লরি চলাচলের কারণে ওই রাস্তা দিয়ে গ্রামের মানুষজনের যাতায়াত দুরহ হয়ে পড়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের পারদ চড়তে শুরু করে ।যার  বহিপ্রকাশ ঘটে শুক্রবার  দুপুরে । ক্ষোভের অাঁচ শনিবারও অব্যাহত থাকে কোড়া গ্রামে । 

অবৈধ বালিখাদান থেকে বালি লোড করে  গ্রামের রাস্তা দিয়ে বালির যাতায়াত শুরু হতেই একযোগে পথে নামে গ্রামবাসীরা । তারা ওভারলোড বালির লরি আটকে বিক্ষোভ দোখানো শুরু করতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।খবর পেয়ে জামালপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ।সৌমিত্র ঘোষ জানান ,গ্রামের রাস্তাদিয়ে আর বালির লরি যাতায়াত করবে না বলে পুলিশ আশ্বাস দিলে তাঁরা লরি ছেড়ে দেন । শুক্রবারের ঘটনার পর থেকে অবৈধ খাদান বন্ধ রয়েছে । অসাধু ব্যক্তিরা ফের যাতে ওই অবৈধ খাদান চালু করতে না পারে তারজন্য শনিবারও সারাদিন  গ্রামবাসীরা ততপরতা জারি রাখে । গ্রামবাসীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছে ফের অবৈধ বালিখাদান চালু হলে তারা বৃহত্ত্বর আন্দলনে নামবেন । ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এদিন আরও  বলেন ,কোড়া গ্রাম সংলগ্ন মুইদিপুরেও একটি বালি খাদান রয়েছে ।সেই খাদানেও প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ টি লরিতে বালি লোড হচ্ছে ।ওইসব  ওভারলোড বালি বোধাই লরি মুইদিপুর থেকে দামোদরের বাঁধের রাস্তা দিয়ে গিয়ে কানাড়িয়া সেতু পেরিয়ে হুগলীতে চলে যাচ্ছে । এরজন্য  বর্ষার মরশুমে দামোদরের বাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে । অথচ সেচ দপ্তর নীরব ভূমিকা পালন করে চলেছে । 

এই বিষয়ে জামালপুর ব্লকের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন , “কোড়া এলাকায় মুণ্ডেশ্বরী নদীতে অবৈধ খাদান চালু করা হয়েছিল তা জানাছিল না।রাস্তা বাঁচানোর জন্য অবৈধ খাদান থেকে  লোড হওয়া বালির লরি যাতায়াত বন্ধ করেদিয়ে কিছু ভুল করেননি ।  
সবিস্তার খোঁজ নিয়ে দেখছি । গ্রামবাসীদের অভিযোগ সত্য হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে । বিষয়টি নিয়ে উচ্চ কর্তৃপক্ষেরও দৃষ্টি আকর্ষন করা হবে । ”অন্যদিকে লোয়ার দামোদর ইরিগেশন ডিভিশনের  ( সিঙ্গুর - হুগলী )সাব ডিভিশনাল অফিসার দীনের ঠিকাদার বলেন , “বাঁধের রাস্তা দিয়ে ভারী  যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বেআইনি । বর্ষার মরশুমে বাঁধের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে ।  এতকিছুর পরেরও যদি বাঁধের রাস্তা দিয়ে  কেউ ভারী যানবাহন নিয়ে যায় তবে তা বেআইনি কাজ হচ্ছে ।এই যাতায়াত বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে । ”

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।